ঋতু পরিবর্তনে শিশুর যত্ন
শীত ঋতুর পর আসে বসন্ত ঋতু। ঋতু পরিবর্তনের প্রভাব সকল প্রাণির ওপরেই পড়ে। আর এই সময় শিশু ও বৃদ্ধদের বেশি সতর্ক থাকতে হয়। এ সময় শিশুদের সাধারণ ঠান্ডা লাগা, হাঁচি, কাশি হয়ে থাকে। হাল্কা জ্বরও হতে পারে। সামান্য অসাবধানতার ফলে সাধারণ ঠান্ডা লাগা বা ফ্লু থেকে হতে পারে নিউমোনিয়া কিংবা ব্রংকিওলাইটিস। এ সময় ব্রংকিওলাইটিস ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। সাধারণ ঠান্ডা লাগা বা ফ্লু থেকে শিশুদের নাক দিয়ে পানি বের হতে থাকে, হাঁচি ও কাশি হয়।
সাধারণ সর্দি-কাশিতে শিশুর যত্নঃ
শিশুকে আবহাওয়া অনুযায়ী পোশাক পরাতে হবে। বেশি কাপড় বা মোটা কাপড় পরিয়ে রাখবেন না। এতে শিশু ঘেমে আরও ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। রাতে কোনোভাবেই সোয়েটার পরানো উচিত নয়। কাশি থাকলে শিশুকে গরম পানির সঙ্গে লেবু ও চিনি বা গরম পানির সঙ্গে মধু মিশিয়ে ৫-৬ চা-চামচ করে দিনে ৪-৫ বার খাওয়ান। সর্দি হয়ে শিশুর নাক বন্ধ হয়ে থাকলে সাধারণ স্যালাইন (খাওয়ার স্যালাইন) ড্রপারের সাহায্যে শিশুর দুই নাকের উভয় ছিদ্রে দুই থেকে তিন ফোটা দিন এবং কটনবাড দিয়ে নাক ভালোভাবে পরিষ্কার করে দিতে হবে। এভাবে শিশুকে প্রতিবার খাওয়ার আগে ও ঘুমের আগে এটা করুন। নাক পরিষ্কার করার জন্য সরিষার তেল ব্যবহার করা যাবে না। শ্বাসকষ্ট থাকলে শিশুরা ঠিকমতো খেতে পারে না, তাই কিছুক্ষণ পর পর অল্প করে দুধ খাওয়াতে হবে। বেশি কাশি হলে নেবুলাইজেশন করানো যেতে পারে। এরপরেও শিশু বেশি অসুস্থ বোধ করলে, জ্বর বেশি থাকলে, বুকে গড় গড় আওয়াজ হলে বা শ্বাসকষ্ট শুরু হলে শিশুকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
প্রতিরোধঃ
আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত রোগ সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। শিশুর অভিভাবক বা যাঁরা শিশুর লালন-পালনের দায়িত্বে থাকেন, তাঁদের অবশ্যই আবহাওয়ার পরিবর্তন বুঝতে হবে। দিন ও রাতের যে সময়ে গরম অনুভূত হয়, তখন বেশি গতিতে ফ্যান চালানো যাবে না, শেষ রাতের দিকে ফ্যান বন্ধ করতে হবে। অনেক সময় শুধু ফ্যানের বাতাসের কারণে শিশু বিভিন্ন জটিলতায় আক্রান্ত হয়। তাই সতর্কতামূলক হিসেবে রাতে শোয়ার সময় শিশুর শরীরে পাতলা নরম কাপড়ের পোশাক পরাতে হবে।
মৌসুমি রোগ প্রতিরোধের আর একটি উপায় হচ্ছে সুষম ও ভিটামিনযুক্ত খাবার খেতে শিশুকে আগ্রহী করে তোলা। এই খাদ্য তালিকায় থাকতে পারে শাক-সবজি, মৌসুমি বিভিন্ন ফল, মাছ-মাংস, ভাত, ডাল ইত্যাদি দেশি খাবার। পরিবারের কেউ যদি ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত থাকে, তাহলে সে যেন শিশু থেকে দূরে থাকে।
যদি শিশু একেবারেই খেতে না পারে তাহলে অবশ্যই শিশুকে কাছের কোনো চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।