চুলের পরিচর্যা

চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হয়ে ওষুধ গ্রহণ করে চুল ঘন করার বা চুল পরা বন্ধ করার চেষ্টার অনেক পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া তো আছেই, আর আদৌ যে সমস্যার সমাধান হবে- তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু ঘরোয়া উপায়গুলো যদি নিয়ম করে মেনে চলেন, সম্পূর্ণ পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াহীনভাবে পাবেন ঝলমলে, উজ্জ্বল, কালো- ও সবচেয়ে বড় কথা দারুণ ঘন চুল! এরকমই কিছু ঘরোয়া উপায় জেনে নিয়ে চুল ঘন করতে চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে নিজের রান্নাঘরে যান এবং দেখুন চমৎকার ফল!

১. চুল পড়া বন্ধ করা এবং নতুন চুল গজানোর মাধ্যমে স্থায়ীভাবে ঘন চুল পাওয়ার প্রধান পথ হলো- চুলের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খাওয়া। এতে চুলের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি দেহের ভেতর থেকে কাজ করে যাবে চুল ভালো রাখার জন্য।

২. নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের তেল চুলের গোড়ায় ঘষে ঘষে লাগিয়ে মাথার শিরা-উপশিরায় রক্তসঞ্চালন বাড়ান। এভাবে তেলে থাকা উপাদানগুলো চুলে পৌঁছালে চুল সরাসরি কিছু প্রয়োজনীয় পুষ্টি তো পাবেই এবং একইসাথে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকবে ও চুল নরম- কোমল-মসৃণ-নমনীয় হবে। চুলে নারকেল তেল, বাদাম তেল, তিলের তেল, আমলকির তেল,
জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করতে তো পারেনই, এমনকি রোজকার রান্নার সয়াবিন তেলও এক্ষেত্রে ফেলনা নয়। প্রয়োজন হলে নিজের সুবিধামতো বিভিন্ন তেল একসঙ্গে মিশিয়ে
ব্যবহার করতে পারেন কিংবা তেলের সঙ্গে আদা, রসুন, ধনে পাতা, আমলকি, জবা ফুল- ইত্যাদির যেকোনোটির নির্যাস মিশিয়ে ‘এসেনশিয়াল অয়েল’ তৈরি করে নিয়ে তাও লাগাতে পারেন। এতে উপকার পাবেন আরো বেশি।

৩. অনেক নারী-পুরুষের মধ্যেই চুল পড়ার হার অনেক বেশি দেখা যায়। এর মূল কারণই হলো- চুলে তেল ব্যবহারে গুরুত্ব না দেয়া। এক্ষেত্রে আমাদের দাদী-নানিদের আদ্যিকালের কিছু টোটকা ব্যবহার করে দেখুন। চুলে নারকেল তেলের ব্যবহার শুধু প্রাচীন কিংবা সাধারণই নয়, চমৎকারীও। সপ্তাহে অন্তত একবার নারকেল তেলের সাথে লেবুর কয়েক ফোঁটা রস মিশিয়ে মাথার চামড়ায়-চুলের গোড়ায় ভালোভাবে ঘষে ঘষে লাগান, অর্থাৎ ‘ম্যাসেজ’ করুন। রাতভর মাথায় তেল ও লেবুর রসের মিশ্রণটি রেখে পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই শ্যাম্পু করে ফেলুন।

৪. রেঢ়ির তেল চেনেন? চোখ কপালে না তুলে এর ইংরেজি প্রতিশব্দটি শুনুন- ‘ক্যাস্টর অয়েল’। এবার পরিচিত লাগছে তো? চুলের জন্য জাদুকরী এই রেঢ়ির তেল চুলকে ঘন করার সাংঘাতিক কার্যকরী একটি উপায়। কিন্তু এই তেল খুব ঘন হওয়ায় এটি সরাসরি চুলে লাগালে পরে তা ধুয়ে ফেলার সময় প্রাণ ওষ্ঠাগত হবে। তাই এই তেলের সাথে অন্য যেকোনো তেল কিংবা কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে সপ্তাহে অন্তত একবার চুলের গোড়ায় লাগান। দ্রুত ফলাফলের জন্য সম্ভব হলে প্রতিদিন বা একদিন-দু’দিন পরপর লাগালেও ক্ষতি নেই।

৫. মেথি বেটে এর সাথে খানিকটা পানি মিশিয়ে নিয়ে ঘন মিশ্রণটি সপ্তাহে একবার চুলের গোড়ায় ঘষুন। ফলাফল পাবেন খুব দ্রুতই। চুলের সব ধরনের সমাধানের জন্যই কৃত্রিম কোনো পণ্য বা ওষুধের সাহায্য না নিয়ে যতোটা সম্ভব- প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল হোন। তাহলেই চুল ফিরে পাবে প্রাণ।