থানকুনি
বাংলা বা স্থানীয় নামঃ- থানকুনি/ থুলকুড়ি
ইউনানী নামঃ- থানকুনী
আয়ুর্বেদিক বা কবিরাজী নামঃ- মণ্ডূকপর্ণী
ইংরেজি নামঃ- Indian penny wort
বৈজ্ঞানিক নামঃ- Centella asiatica (Linn.) urban
পরিবারঃ- Apiaceae
পরিচিতিঃ বহুল পরিচিত ছোট বিরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ। পাতা বৃত্তাকার, অবিকল একাদশী- দ্বাদশী চাঁদের মতো দেখতে। পাতার কিনার ঈষৎ খাঁজকাটা। গোঁড়া হতে সরু সরু শাখা বের হয় এবং প্রত্যেক শাখার মাথায় একটি করে পাতা থাকে। পাতার বোঁটা ২-৩ ইঞ্চি (৫-৮ সেঃ মিটার) লম্ব্বা হয়। মাটি সরস ও উর্বর হলে পাতা একটু বড় হয় এবং বোঁটাও লম্ব্বা হয়। শীতের শেষে বসন্ত কালে ফুল ও ফল হয়। ফুল ফিকে-নীল, খয়েরী অথবা সাদা বর্ণের হয়। বীজ শক্ত ও চ্যাপ্টা হয়।
( Temperament)- মিযাজঃ প্রথম শ্রেণীর শীতল আর্দ্র।
ব্যবহার্য অংশঃ- সমগ্র উদ্ভিদ।
সেবন মাত্রাঃ- চূর্ণঃ ৫০০মিঃ গ্রাম হতে ১গ্রাম।
তাজা উদ্ভিদের রসঃ ২০-৩০মিলি।
অপকারিতাঃ মাত্রার অধিক থানকুনির রস সেবন করলে মাথা ব্যথা কিংবা সর্দি হতে পারে।
সংশধনঃ- গোলাপ ফুল ও মর্ যন্ জোশ এর সংশোধক।
সাধারণ ক্রিয়াঃ- হজমকারক, স্নায়ু শক্তি বর্ধক, স্মৃতি শক্তি ও মেধাশক্তি বৃদ্ধিকারক।
দেহের ,ক্লান্তি অপসারক এবং লাবন্যতা রক্ষা কারক। আমাশয়, দুষিতক্ষত, চর্মরোগ, মুত্রকৃচ্ছ্রতা, অপুষ্টি জনিত কেশপতন এবং মুখের ঘা নিরসনে বিশেষ উপকারী।
আময়িক ব্যবহারঃ- বাংলাদেশে ও ভারত সহ গ্রীষ্ম অঞ্চলীয় দেশ সমূহে থানকুনি ভাল জন্মে। বিশেসত; পুকুর পারে কিংবা স্যাঁত স্যাঁতে জায়গায় থানকুনি প্রচুর হতে দেখা যায়। থানকুনি নিজস্ব ওষুধি গুণের জন্য গ্রাম-বাংলার মানুষের নিকট অতি পরিচিত। রক্ত আমাশয় ও পুরাতন আমাশয়ের ক্ষেত্রে এটি একটি সার্থক ভেষজ উপাদান। বয়স্ক ও শিশু উভয়ের পক্ষেই উপযোগী। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে থানকুনি ও মধু শীতলকারক, স্মৃতিশক্তি বরধক,রক্ত পরিস্কারক,মৃদু্বিরেচক, মুত্র বর্ধক এবং মুখের দুর্গন্ধ নাশক। ভারতীয় চিকিৎসকগণ অদ্যাবধি নানাবিধ চর্মরোগে থানকুনি ব্যবহার করে থাকেন। ১৮৫৭ সালে ডাঃ অ্যান্ডোট কর্তৃক প্রুভিংয়ের মাধ্যমে থানকুনি হোমিওপ্যাথিতে প্রবর্তিত হয়। সেখানে তারা শুঁকনো লতাপাতা থেকে টিংচার (Tincture) প্রস্তুত করেন। থানকুনি দিয়ে ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞানের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ তৈরি করা হয়। উল্লেখ করা যেতে পারে- শরবত এজায, শরবত আরযানী, শরবত খাসীনা, শরবত সানা, কুরছ পেনিট্যাব, শরবত বাসক প্রভৃতি।
কার্যকারিতাঃ পিত্ত প্রশমক, জীবাণু নাশক, দাদ,পাপড়ি, একজিমা, খোস- পাঁচড়া,কুষ্ঠের ক্ষত ও আমাশয়ে ফলপ্রদ।
0 Comments